নিজস্ব প্রতিবেদক
সারাদেশে এক সময় মঞ্চকাপানো যাত্রা দলের অভিনেতা নরসিংদীর ফরিদ মিয়া এখন অসহায় ও বেকার। কোন কর্ম না থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পরেছেন অথৈয় জলে। সরকারী সাহায্য পেতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সংশ্লিষ্ট দফতরে দফতরে।
জানা যায়,গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী যাত্রাপালা একে বারেই বিলুপ্তি হয়ে গেছে। তাই ভালো নেই এ যাত্রাপালার মঞ্চের রাজা-রাণী ও তার সেনাপতিরা। যার ফলে এ পেশায় নিয়োজিত শিল্পী-কলাকৌশলিরা অনেকেই বেকার অবস্থায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
এছাড়া এ শিল্পীদের মধ্যে এখন কেউ কেউ অটোরিকশা চালাচ্ছেন,কেউ কাঁচামালের ব্যবসা করছেন,কেউ রাস্তার ফুটপাতে পান-সিগারেট বিক্রিকরাসহ আবার কেউ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তেমনি এক অভিনেতা ফরিদ মিয়া। তার জন্ম ১৯৬৩ সালে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষা হরিপুর গ্রামে।
বর্তমানে পরিবার নিয়ে নরসিংদী শহরের বানিয়াছল মহলায় ভাড়া বাড়ীতে বসবাস করছেন। যার ছোট বেলা থেকে নেশা ছিল সাংস্কৃতি অঙ্গণে। এ নেশাকে তিনি একদিন পেশা হিসাবে পরিণত করেন। তার বয়স যখন ১৮ তখন একদিন তার পরিচয় ঘটে যাত্রা দলের পরিচালক ও অভিনেত্রী মায়া রানির সঙ্গে। এ পরিচয় থেকে তিনি ভাগ্যলিপী অপেরা নামে একযাত্রা দলে অভিনয় করে যাত্রা জগতে প্রবেশ করেন। পরে এ অভিনয় কে তিনি পেশা হিসাবে পরিনত করেন ফরিদ মিয়া। এর পরে থেকে পর্যায়ক্রমে কোহিনুর অপেরা, রূপালী অপেরা,আদি বঙ্গ শ্রী অপেরা,বলাকা অপেরাসহ বেশকিছু নামী-দামী যাত্রা দলের অভিনেতা হয়ে কাজ করেছেন।
যাত্রা মঞ্চে কোন সময় রাজা,সেনাপতি,সওদাগর, খলনায়কসহ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে সুনাম কুড়ান তিনি। কিন্তু গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী যাত্রাপালা এখন আর মঞ্চায়িত হয় না। তাই যাত্রাপাল মঞ্চায়িত করা জন্যেও আর কেউ ডাকে না। যার ফলে মঞ্চকাপানো সে অভিনেতার বেকার অবস্থায় এখন খুব কষ্টে দিন কাটছে।
ফরিদ মিয়া বলেন,দেশ থেকে ঐহিত্যবাহী এসব যাত্রীপালা এখন বিলুপ্তির পথে। তাই সম্পন্ন বেকার হয়ে পড়েছি। কোন উপায় না দেখে মাছ বিক্রি করছি। আবার যখন যে কাজ পায় তা করেই কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করছি। একটা কিছু করে তো জীবিকা নির্বাহ করতে হবে?
তাছাড়া অর্থের অভাবে ভালো কোন ব্যবসাও করতে পারছেন না তিনি। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন এই অভিনেতা।
Leave a Reply